themedia24:বহুল আলোচিত জনপ্রিয় ধারাবাহিক ব্যাচেলর পয়েন্ট এর নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির নতুন নাটক ‘দই।ভালোবাসা দিবসে ইউটিউব চ্যানেল ধ্রুব টিভি তে আপলোড হয়েছে এই নাটক।কেমন হলো নতুন নাটক টি?
ভালো দিকঃসুন্দর লোকেশন,উপভোগ্য চরিত্রায়ন এবং অভিনয়,ভালো নির্দেশনা।
খারাপ দিকঃখুবই সাদামাটা ক্লাইমেক্স ছাড়া গল্প,প্রাপ্তবয়স্ক সংলাপের ব্যবহার, মদ ও মাদকের উপস্থাপন।
গুনি নির্মাতা হিসাবে কাজল আরেফিন অমি অনেকদিন ধরেই বেশ জনপ্রিয়।প্রত্যেক নির্মাতার গল্প বলার একটি নিজশ্ব ধরন থাকে, তাতে তার কাজের স্বকীয়তার ছাপ থাকে। অমির এই গল্প বলাতেও তাই আছে,অমি তার জনপ্রিয় সিরিয়াল ব্যাচেলর পয়েন্টের ধারাটাই এখানে অনুসরন করেছেন।শিল্পী নির্বাচনেও ব্যাচেলর পয়েন্টের অনুকরন, অভিনয় এর ভাষাও অনুরূপ। সাদামটা একটা গল্পের প্রানাবন্ত উপস্থাপন এই নাটক।
কাহিনী: গ্রামের দুবাই ফেরত এক যুবকের বিয়ে এবং এবং বর কনের পরিবারের মানুষের ছোট ছোট কিছু গল্প নিয়েই এই নাটক।খুবই প্রচলিত সহজ সাদামাটা কাহিনীর নাটক দই।
কাহিনী -১০/৫
অভিনয়ঃ প্রত্যেক অভিনয় শিল্পীর অভিনয় ছিলো সাবলীল, কোন কিছুই অতিরঞ্জিত মনে হয় নাই,তবে গ্রামের মানুষের মুখে কোন আঞ্চলিকতা ছাড়া একদম শহুরে আধুনিক ভাষাটা গল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা প্রশ্ন থেকে যায়।মারজুক,সাব্বির,ইভানা,পলাশ,চাষি আলম,সারাফাত জীবন,তামিম,পাভেল,বাচ্চু সহ যারা অভিনয় করেছেন সবাইকেই ভিষণ সাবলীল লেগেছে।
অভিনয়ঃ ১০/৮
সংগীতঃ আহমেদ সৌরেন এর করা নাটকের আবহ সংগীত মোটামুটি ভালো ছিলো,অমির নাটকের আবহ সংগীতের একটা নিজশ্ব ধরন আছে, এই নাটকেও তার ছায়া বিদ্যমান,নাটকের শেষ অংশে একটা গান ছিলো, গানটা চলনসই, চ্যানেলের ডেস্ক্রিপশন লিস্ট থেকে গানের শিল্পীর নাম খুজে পাওয়া যায় নাই।নাটকের স্ক্রলে গায়কে দেখা যায় সংগিত পরিচালক সৌরেন নিজেই গানে কন্ঠ দিয়েছেন।
সংগীত-১০/৭
চিত্রগ্রহন,সম্পাদনা,নির্দেশনা ও অন্যান্যঃ
চিত্রগ্রহনঃনাটকের চিত্রগ্রাহক (সিনেমাটোগ্রাফার) ছিলেন ফুয়াদ বিন আলমগির, তার দৃশ্যধারন ও লোকেশনের সাথে চরিত্রের উপস্থাপন যথেষ্ট ভালো ছিলো।
চিত্রগ্রহনঃ১০/৭
শব্দধারন-নাটকের সাউন্ড কোয়ালিটি মানসম্মত।
১০/৭
লোকেশন ও শিল্প নির্দেশনাঃ গ্রামের লোকেশনে নাটক এবং যথেস্ট বাস্তবিক উপাস্থাপন ছিলো,বিয়ের হলুদের অনুষ্ঠান এর মঞ্চ নির্মান,ছোট কনসার্টের মঞ্চ নির্মান ,বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন এর জন্য সেট নির্মান এই সাব কাজে শিল্প নির্দেশক ভালো পরিশ্রম করছেন,এখনকার স্বল্প বাজেটের নাটকে এই খরচ, প্রযোজক কে বাহাবা দিতেই হয়।
১০/৮
সম্পাদনাঃসম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন আরিফিন সরকার এবং তার কাজটা ঠিকাঠাকই করেছেন।তবে কালার গ্রেডিং টা আরেক টু ভালো হলে মনে হয় ভালো হতো।
এখন কার অধিকাংশ দর্শক এই নাটক গুলো মোবাইলে দেখে, তাই কালার টোন টা আরেকটু চোখে লাগার মত হওয়া আবস্যক।
নির্দেশনা- কাজল আরেফিন অমি নির্দেশক হিসেবে বরাবরই ভালো,এবারো ভালোই করেছেন।গল্প বলা, চরিত্রর গাথুনি তৈরি,পর্দায় সবাইকে উপস্থাপন সব কিছু ভালো ছিলো।
তবে কিছু ব্যাপার খুবই দৃষ্টি কটু ছিলো
১.নাটকের কিছু সংলাপ একদম প্রাপ্ত বয়স্কদের উপযোগী,পরিবারের সবার সাথে বসে কি এটা উপোভোগ করা যাবে আদো
২.অনেক বেসি মাদক ও মদের ব্যবহার,গল্পের সার্থে হয়ত এটা করা হয়েছে,কিন্তু এটাও সত্যি আপনার অধিকাংশ দর্শক তরুন, যারা এই নাটকের ভাষা ও কালচার অনুসরণ করবে,তাদের জন্য কি এটা বাজে উদাহরণ হয়ে থাকলো না??
দর্শকদের চাহিদা ও অনেক বেসি ভিউস এর জন্য ‘অমি’র মানের একজন পরিচালক কেন যেন তার একই ফরমুলার বৃত্ত থেকে বের হতে চাইছেন না,দর্শক এই নাটক দেখে ক্ষনিকের বিনোদিত হবে সত্যি, তবে একজন সত্যিকারের ভালো পরিচালকের কাজের শিল্প মান তার এই ক্রিয়েশনে থাকবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
নির্দেশনাঃ ১০/৭
টোটাল রিভিউ দইঃ ১০/৭
সব মিলিয়ে এই দই নাটক টি বর্তমান গতানুগতিক ধারার একটা উপভোগ্য নাটক যা এই সময়ের তরুন দর্শকদের আকৃষ্ট করবে।